বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২ জুন (রোববার) রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শামীমা দিপ্তী, জসিম সরকার এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ ও লাবনী আক্তার। এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয় গত ২৩ এপ্রিল।
এর আগে, গত ২১ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ মামলাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দেন। একইসঙ্গে মামলার যাবতীয় নথিপত্র বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের বেঞ্চে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনাস্থলে দায়িত্বে ছিলেন বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
এর পাঁচদিন পর, ২০২০ সালের ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস টেকনাফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। পরে র্যাব তদন্ত করে একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে, যেখানে সিনহার মৃত্যুকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা এবং সাগর দেবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে স্থানীয় তিন বাসিন্দা—নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকেও যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। বাকি সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও আপিল করেন। সেই আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে এখন অপেক্ষা শুধু হাইকোর্টের রায়ের।